মুস্তফা কামালের জীবনের গল্প
- আপডেট সময় : ০১:৪৮:০৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৩ ৫৪২ বার পড়া হয়েছে
মোঃ মুস্তাফা কামাল, পিতা মোঃ কালু মিয়া বেপারি। ১৯৬২ সালে মুন্সিগঞ্জ জেলার গজারিয়া থানার শিমুলিয়া গ্রামে আমার জন্ম । ১৯৭২ সালে আমার বয়স যখন মাত্র ১০ বছর তখন আমার বাবা মারা যান, যার ফলে অভাব-অনাটন ছিল আমাদের পরিবারের নিত্যদিনের সঙ্গী। এই অভাব-অনটন কে সাথে নিয়ে কখনোই আমার প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা গ্রহণ করার সুযোগ হয়নি। তবে আমি এখন পর্যন্ত নিজের চেষ্টায় বাংলা ও ইংরেজি দুই ভাষাই লিখতে ও পড়তে পারি।
আমার চাচাতো ভাইয়েরা যখন লেখা পড়া করতো তখন আমি ওদের পাশে বসে একদৃষ্টিতে ও মনোযোগ দিয়ে তাদের পড়ালেখা করা দেখতাম। তবে তাদের কখনোই বুঝতে দিতাম না যে আমি পড়েলেখা শেখার জন্য তাদের পাশে বসে আছি এবং তাদের পড়ালেখার দিকে মনোযোগ দিয়ে আছি। এভাবে কিছু দিনের মধ্যে আমি বাংলা লেখা ও পড়া শিখি। যখন সবাই জানতে পারে আমি নিজের চেষ্টায় বাংলা লেখতে ও পড়তে পারি তখন সবাই বলে মুস্তফা পড়ালেখার সুযোগ পেলে জীবণে অনেক বড়ো হতো।
এরপর একদিন আমি বেলতলী বাজারে হটাৎ করে আমার চোখ পরে নিও পিকচার ওয়ার্ড বূক নামে একটা বই এর দিকে। এই বইয়ে ইংরেজি বর্ণমালা ও ব্যকরণ সহ সম্পূর্ণ বাংলায় লেখা। তখন বইটির মূল্য ছিল মাত্র ৫ টাকা। এরপর থেকে শুরু হয় আমার ইংরেজি ভাষা শেখার পর্ব। আর এভাবেই আমি শিখেফেলি ২ টি ভাষা।
আমার জেঠাতো বোনের স্বামী অর্থাৎ আমার দুলাভাই, সে পেশায় একজন পল্লি চিকিৎসক। তাকে দেখে আমার মধ্যে একজন ডাক্তার হবার ইচ্ছা জাগে। যেই ভাবনা সেই কাজ, আমি কিনে ফেলি এমবিবিএস ডাক্তার রশিদ খানের লেখা মেডিসিন বুক এর প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় খন্ড। একদিকে আমি বই গুলো পড়তে থাকি এবং আমার দুলাভাই এর সাথে সরাসরি প্র্যাক্টিস করতে থাকে। এভাবেই পল্লি চিকিৎসাও অল্ল দিনে আমার নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। তারপর আমি দীর্ঘ ৭ বছর পল্লি চিকিৎসায় নিয়োজিত থাকি ও সুনাম অর্জন করি।
১৯৯৬ সাল। আমি দক্ষিণ আফ্রিকার উদ্দেশ্যে দেশ ত্যাগদ করি। বাংলাদেশে তখন চলছিল গ্রীষ্মকাল। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকাতে আসার পর আমি সেখানে শীতকাল পাই। তখন আমি চিন্তা করতে থাকি পৃথিবীর উত্তর মেরুতে গরম আর দক্ষিণ মেরুতে শীতকাল কিভাবে এটা সম্ভব। এসব নিয়ে চিন্তা করতে করতে গোটা পৃথিবী, পৃথিবীর মানুষি, পশুপাখি, গাছপালা, খনিজ সম্পদ, মহাকাশ, চাঁদ, সূর্য, গ্রহ, নক্ষত্র সমস্ত কিছু আমার চোখের সামনে ভাসতে থাকে। আর আমি তা সম্পর্কে সাথে সাথে তা লিখে রাখি। আর আমার চিন্তা ও লেখাগুলোই আপনাদের মাঝে তুলে ধরবো।