পুরাতন স্কুল বিল্ডিংয়ের মূল্য নির্ধারণে সাতক্ষীরা সদর উপজেলা প্রকৌশলীর তেলেসমাতি কারবার
- আপডেট সময় : ০৩:৪৬:৪৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৩ ৭৪ বার পড়া হয়েছে
সাতক্ষীরা পৌরসভার ইসলামিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিত্যক্ত দোতলা ভবন নিলামে বিক্রি হয়েছে মাত্র ১ লাখ ২৮ হাজার ৫ শত টাকা। উপজেলা প্রকৌশলী অফিসার সেটির দাম নির্ধারণ করেছিলেন মাত্র ১ লাখ ২৬ হাজার ৩ শত ৯১ টাকা। ফলে সরকারী নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে মাত্র ২ হাজার ১ শত ৯ টাকা বেশী দামে বিক্রি হয়েছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, সরকারি মূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে শুভঙ্করের ফাঁকি দিয়েছেন সাতক্ষীরা সদর উপজেলা প্রকৌশলী ইয়াকুব আলী। তিনি নিজেই সরেজমিনে না এসে অফিসে বসে সিন্ডিকেটের সাথে আঁতাত করে অল্প দাম নির্ধারণ করেছেন। এভাবে সরকারি ভবন নামমাত্র টাকায় নিলামে বিক্রি করায় সিন্ডিকেটকারীরা হচ্ছেন আঙুল ফুলে কলাগাছ। আর সরকার বঞ্চিত হচ্ছে কাঙ্খিত রাজস্ব থেকে। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যে জনমনে সৃষ্টি হয়েছে নানান প্রশ্নের।
সূত্র জানায়, ইসলামিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন পরিত্যক্ত হওয়ায় নিলামে বিক্রির সিদ্ধান্ত নেয় উপজেলা নিলাম কমিটি। তারই ধারাবাহিকতায় গত ১৫ নভেম্বর স্থানীয় পত্রিকায় উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল গণি স্বাক্ষরিত প্রকাশ্যে নিলামে বিক্রির জন্য বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। বিজ্ঞপ্তিতে গত ২১ নভেম্বর ও ২২ নভেম্বর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিস কক্ষ ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে আগ্রহী প্রার্থীদের দরপত্র ক্রয় করার আহ্বান জানানো হয়। সে অনুযায়ী একাধিক আগ্রহী নিলাম ক্রেতা সেখানে উপস্থিত হয়ে দরপত্র ক্রয় করে। ২৩ নভেম্বর দরপত্র দাখীলের দিনে প্রভাবশালী কতিপয় ব্যক্তি সিন্ডিকেট করে সেখানে কাউকে ঢুকতে দেয়নি। ফলে নামমাত্র ধার্যকৃত টাকা থেকে সামান্য কিছু বেশি দিয়ে ওই দিন বিকালে কৌশলে সিন্ডিকেটকারীরা স্কুলের পরিত্যাক্ত ভবন কিনে নেন। এরপর সেটি কামরুল নামের একজনের কাছে ওই সিন্ডিকেট সাড়ে ৫ লাখ টাকায় বিক্রি করে দিয়েছেন।
ওই বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মফিজুল ইসলাম বলেন, টেন্ডারের আগে ও পরে আমার কাছে শোনা হয়নি বা আমাকে জানানো হয়নি। এতা অল্প দামে বিদ্যালয় টেন্ডার দেওয়ায় ক্ষোভে বিদ্যালয় ভাঙার প্রথম দিন এলাকাবাসী বাধা দিয়েছিল। আমার কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আমি তাদের এ ব্যাপারে কিছুই বলতে পারিনি। এখনও ভাঙার কাজ চলছে। সরকারী জিনিস সরকারী লোকে টেন্ডার দিয়েছে। তারা যেটা ভাল মনে করেছেন তারা সেটাই করেছেন।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলা প্রকৌশলী ইয়াকুব আলী বলেন, এসব ব্যাপারে খোচাখুঁচি ছাড়া আপনাদেরতো আর কোন কাজ নেই? এ ব্যাপারে কি বলবো? যা কিছু শোনার শিক্ষা অফিসে যেয়ে শোনেন।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল গণি বলেন, ‘উপজেলা নিলাম কমিটি কর্তৃক নির্ধারিত মূল্য অনুযায়ী স্থানীয় পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। সেই মোতাবেক সর্বোচ্চ দর দাতাকে নিলাম দেওয়া হয়েছে।’ ওই ভবনের মূল্য এত কম হলো কেন এমন প প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, উপজেলা প্রকৌশলী সরকার নির্ধারিত বিক্রয় মূল্য নির্ধারণ করে দিয়েছিলেন। ওই মূল্যের কম বিক্রয় করা সুযোগ নেই। তবে নির্ধারিত বিক্রয় মূল্যের বেশি দরে কেউ কিনতে চাইলে কোন আপত্তি নেই।