ঢাকা ০৩:০২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৪, ৭ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
সাভারের শীর্ষ সন্ত্রাসী রাজীবের সহচর ‘জাকির মামা ওরফে সমকামী জাকির’গ্রেফতার র‍্যাব ১৩ এর একটি আভিযানিক দলের হাতে ২০০ বোতল ফেন্সিডিল সহ আলম মিয়া নামে এক ব্যক্তি আটক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সাভার পরিদর্শনে এসে আবেগে আপ্লুত দেওয়ান সালাউদ্দিন বাবু’ সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস সাভারে মিস্ত্রি থেকে পীর কাজী জাবের আল জাহাঙ্গীর, জানালেন গ্রামবাসী  সাভার দলিল লেখক কল্যাণ সমিতির নেতৃত্বে আকতার-আফসার-মেহেদী শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাজারে আলহাজ্ব কফিল উদ্দিনের শ্রদ্ধা জ্ঞাপন সাভারের বিভিন্ন পূজা মন্ডব পরিদর্শন করেছেন বিএনপি নেতা খন্দকার শাহ মাইনুল হোসেন বিল্টু শারদীয় দূর্গা পূজার শুভেচ্ছা জানালেন কফিল উদ্দিন সাভারের তেঁতুলঝোড়ায় বিভিন্ন পূজা মন্ডব পরিদর্শন করেছেন হাজী জামাল উদ্দিন সরকার শারদীয় দুর্গাপূজায় হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বিএনপি নেতা ওবায়দুর রহমান অভি

শান্তর দরজা সবার জন্য খোলা

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৯:০১:১৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২ ডিসেম্বর ২০২৩ ১১৬ বার পড়া হয়েছে
sandhanitv অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

খেলাধুলা ডেস্ক:
সাকিব আল হাসান ও লিটন দাস যদি থাকতেন তাহলে নাজমুল হাসান শান্তর এমন চরিত্র কী দেখা যেত? আক্রমণাত্মক, আগ্রাসী, জেতার জন্য মরিয়া। নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথমবার অধিনায়কত্বের দায়িত্ব পেয়ে শান্ত ধরা দিলেন ভিন্ন এক রূপে। বোলারদের আঁটসাঁট বোলিংয়ের সঙ্গে শান্তর প্রবল আক্রমণাত্মক ফিল্ডিং। উদ্দীপ্ত অধিনায়কত্ব। লড়াইয়ের ঝাঁঝ।
উইকেটের পেছনে বলয় তৈরি করে রান আটকানোর প্রানান্তকর চেষ্টা। উইকেটের চারপাশে দেয়াল তৈরি করে সিঙ্গেল-ডাবলসে বাধা দেওয়া। সীমানায় দৌড়বিদ রেখে বাউন্ডারি থামানো। সঙ্গে নিখুঁত ফিল্ডিং পজিশন তৈরি করে সুযোগ তৈরির চেষ্টা। পুরো মাঠ যেন হাতের তালুতে এঁকে নিয়ে দাবার চাল চালছেন। তাতে ধরা দিল একাধিক সাফল্য।

প্রথম ইনিংসে হেনরি নিকোলসকে আউট করতে বুদ্ধীদিপ্ত অধিনায়কত্ব করেছিলেন। সচরাচর ফাইন লেগে একটু ওপরে থাকে। কিন্তু মিরাজের বলে একটু ওয়াইড করে পেছনে নাঈমকে পাঠান। ভুল করেন নিকোলস। সুইপ করতে গিয়ে ক্যাচ দেন নাঈমের হাতে। আজ ড্যারেল মিচেলকেও আউট করেছেন একই উপায়ে।

নাঈমের বলে মিশেলকে সুইপ খেলতে আমন্ত্রণ জানান। ফিল্ডিংয়ে পরিবর্তন করে তাইজুলকে নেন ডিপ ফাইন লেগে। লেগ স্লিপ ও ফাইন লেগ উন্মুক্ত রেখে শর্ট লেগের ফিল্ডারকে আরো ক্লোজ করে দেন। তাতে কাজের কাজও হয়। ঝুঁকি নিয়ে সুইপ খেলতে গিয়ে ক্যাচ তোলেন মিশেল। তাতে বাংলাদেশ পেয়ে যায় দিনের প্রথম সাফল্য। এরপর আরো ২ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশ জিতে নেয় ম্যাচ।

অধিনায়ক কেবল নিজের নিজের বুদ্ধিমত্তা কিংবা সামর্থ্যের জোরেই সব করছেন সেটা ভুল। তাকে মাঠে বেশ ভালোভাবে সমর্থন জুগিয়েছেন তিন সিনিয়র মুশফিকুর রহিম, মুমিনুল হক ও তাইজুল ইসলাম। মাঠে চারজনের স্বতঃস্ফূর্ত আলোচনা, সাবলীল মানসিকতা, সক্রিয় মনোভাব এবং স্বেচ্ছাপ্রণোদিত কার্যক্রম দলকে এগিয়ে নিতে প্রত্যক্ষ ভূমিকা রেখেছে তা বোঝা যায় দলীয় বোঝাপড়ায়। যা সম্ভব হয়েছে দুই পক্ষের কারণে।

শান্ত যেমন তিন সিনিয়রের কথা শুনেছেন। ঠিক তেমননি তিন ক্রিকেটার শান্তকে সাহস দিয়েছেন, সমর্থন জুগিয়েছেন। মাঠে এমন বোঝাপড়া দলীয় সাফল্যের জন্য বড় ভূমিকা রাখে বলেই বিশ্বাস করেন শান্ত। এজন্য নিজের নতুন পথ চলায় দরজা সবার জন্য উন্মুক্ত রেখেছেন। সবার কথা শুনছেন তিনি। যেটা ভালো সেটা গ্রহণ করছেন।

শান্তর ভাষ্য, ‘উনারা অনেক হেল্প করেছেন। যখনই তাদের মাথায় কোনো আইডিয়া এসেছে আমাকে জানিয়েছে। এছাড়া শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত হেল্প করেছেন। তারা প্রত্যেকে অনেক অভিজ্ঞ। ব্যক্তিগতভাবে আমি খুবই ওপেন মাইন্ডেড। সবার কাছ থেকে কথা শুনি। এই চারদিন সাড়ে চারদিন যখনই তাদের মনে হয়েছে খুব ভালোভাবে হেল্প করার চেষ্টা করেছেন।’

অধিনায়কত্বে নিজের ভাবনা, দর্শন জানাতে গিয়ে শান্ত যোগ করেন, ‘প্রথমত আমি অধিনায়ক হিসেবে হার-জিত নিয়ে খুব বেশি চিন্তিত না। যে জিনিসটা আমি নিজে করার চেষ্টা করি এবং দলের খেলোয়াড়দের কাছ থেকে চাই তা হলো প্রক্রিয়াটা অনুসরণ করছে কি না এবং খেলোয়াড়দের মধ্যে ওই তাড়না আছে কি না। খেলোয়াড়রা শতভাগ দিচ্ছে কি না।’

‘এ জিনিসটা আমি খেলোয়াড়দের কাছ থেকে চাই এবং আমি নিজেও চেষ্টা করি। যখন আমি দেখি এই জিনিসগুলো হচ্ছে, ফলাফল এমনিই আসবে। কোনোদিন আমরা জিতবো, কোনোদিন হয়তো জিতবো না। কিন্তু আগেই যদি ফল নিয়ে চিন্তা করি তাহলে কঠিন। এটা আমার ব্যক্তিগত পরিকল্পনা।’-শান্ত আরও যোগ করেন।

শান্তকে আপাতত এই সিরিজের জন্যই দায়িত্ব দিয়েছে বোর্ড। সিলেটের পর ঢাকায় দল কেমন করে সেটাই দেখার। তবে দায়িত্ব পাকাপাকির ভাবনায় সিলেট টেস্ট দিয়ে শান্ত একধাপ এগিয়ে গেলেন। নামের পাশে মেরিট পয়েন্টও যুক্ত হলো। তবে ভবিষ্যৎ নিয়ে তিনি এখন মোটেও চিন্তিত ন। তার ভাবনায় এখন কেবল ঢাকা টেস্ট। যেটা জিতে শান্ত নিশ্চিত করতে চান সিরিজ

বাংলাদেশ অধিনায়ক বলেন,‘জানি না আমি (অধিনায়কত্বের দৌড়ে এগিয়ে যাওয়া)। আমি এগিয়ে থাকবো কি না আসলেই জানি না। হয়তো যারা বাইরে থেকে দেখেছেন, তারা আরও ভালো বলতে পারবেন। আমার কাজ হলো আমি যতটুকু জানি,ওই অনুযায়ী কীভাবে দলের সাহায্য করতে পারি। এটাই আমি করার চেষ্টা করেছি। এর বাইরে আমি আসলে এ বিষয়ে কিছু বলতে পারবো না।’

ঘরের মাঠে টেস্টে পর নিউ জিল্যান্ড সফরে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিতে তার কাঁধে নেতৃত্বের দায়িত্ব দিয়েছে বোর্ড। সামনে পাকাপাকি দায়িত্ব দিলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

শান্তর দরজা সবার জন্য খোলা

আপডেট সময় : ০৯:০১:১৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২ ডিসেম্বর ২০২৩

খেলাধুলা ডেস্ক:
সাকিব আল হাসান ও লিটন দাস যদি থাকতেন তাহলে নাজমুল হাসান শান্তর এমন চরিত্র কী দেখা যেত? আক্রমণাত্মক, আগ্রাসী, জেতার জন্য মরিয়া। নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথমবার অধিনায়কত্বের দায়িত্ব পেয়ে শান্ত ধরা দিলেন ভিন্ন এক রূপে। বোলারদের আঁটসাঁট বোলিংয়ের সঙ্গে শান্তর প্রবল আক্রমণাত্মক ফিল্ডিং। উদ্দীপ্ত অধিনায়কত্ব। লড়াইয়ের ঝাঁঝ।
উইকেটের পেছনে বলয় তৈরি করে রান আটকানোর প্রানান্তকর চেষ্টা। উইকেটের চারপাশে দেয়াল তৈরি করে সিঙ্গেল-ডাবলসে বাধা দেওয়া। সীমানায় দৌড়বিদ রেখে বাউন্ডারি থামানো। সঙ্গে নিখুঁত ফিল্ডিং পজিশন তৈরি করে সুযোগ তৈরির চেষ্টা। পুরো মাঠ যেন হাতের তালুতে এঁকে নিয়ে দাবার চাল চালছেন। তাতে ধরা দিল একাধিক সাফল্য।

প্রথম ইনিংসে হেনরি নিকোলসকে আউট করতে বুদ্ধীদিপ্ত অধিনায়কত্ব করেছিলেন। সচরাচর ফাইন লেগে একটু ওপরে থাকে। কিন্তু মিরাজের বলে একটু ওয়াইড করে পেছনে নাঈমকে পাঠান। ভুল করেন নিকোলস। সুইপ করতে গিয়ে ক্যাচ দেন নাঈমের হাতে। আজ ড্যারেল মিচেলকেও আউট করেছেন একই উপায়ে।

নাঈমের বলে মিশেলকে সুইপ খেলতে আমন্ত্রণ জানান। ফিল্ডিংয়ে পরিবর্তন করে তাইজুলকে নেন ডিপ ফাইন লেগে। লেগ স্লিপ ও ফাইন লেগ উন্মুক্ত রেখে শর্ট লেগের ফিল্ডারকে আরো ক্লোজ করে দেন। তাতে কাজের কাজও হয়। ঝুঁকি নিয়ে সুইপ খেলতে গিয়ে ক্যাচ তোলেন মিশেল। তাতে বাংলাদেশ পেয়ে যায় দিনের প্রথম সাফল্য। এরপর আরো ২ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশ জিতে নেয় ম্যাচ।

অধিনায়ক কেবল নিজের নিজের বুদ্ধিমত্তা কিংবা সামর্থ্যের জোরেই সব করছেন সেটা ভুল। তাকে মাঠে বেশ ভালোভাবে সমর্থন জুগিয়েছেন তিন সিনিয়র মুশফিকুর রহিম, মুমিনুল হক ও তাইজুল ইসলাম। মাঠে চারজনের স্বতঃস্ফূর্ত আলোচনা, সাবলীল মানসিকতা, সক্রিয় মনোভাব এবং স্বেচ্ছাপ্রণোদিত কার্যক্রম দলকে এগিয়ে নিতে প্রত্যক্ষ ভূমিকা রেখেছে তা বোঝা যায় দলীয় বোঝাপড়ায়। যা সম্ভব হয়েছে দুই পক্ষের কারণে।

শান্ত যেমন তিন সিনিয়রের কথা শুনেছেন। ঠিক তেমননি তিন ক্রিকেটার শান্তকে সাহস দিয়েছেন, সমর্থন জুগিয়েছেন। মাঠে এমন বোঝাপড়া দলীয় সাফল্যের জন্য বড় ভূমিকা রাখে বলেই বিশ্বাস করেন শান্ত। এজন্য নিজের নতুন পথ চলায় দরজা সবার জন্য উন্মুক্ত রেখেছেন। সবার কথা শুনছেন তিনি। যেটা ভালো সেটা গ্রহণ করছেন।

শান্তর ভাষ্য, ‘উনারা অনেক হেল্প করেছেন। যখনই তাদের মাথায় কোনো আইডিয়া এসেছে আমাকে জানিয়েছে। এছাড়া শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত হেল্প করেছেন। তারা প্রত্যেকে অনেক অভিজ্ঞ। ব্যক্তিগতভাবে আমি খুবই ওপেন মাইন্ডেড। সবার কাছ থেকে কথা শুনি। এই চারদিন সাড়ে চারদিন যখনই তাদের মনে হয়েছে খুব ভালোভাবে হেল্প করার চেষ্টা করেছেন।’

অধিনায়কত্বে নিজের ভাবনা, দর্শন জানাতে গিয়ে শান্ত যোগ করেন, ‘প্রথমত আমি অধিনায়ক হিসেবে হার-জিত নিয়ে খুব বেশি চিন্তিত না। যে জিনিসটা আমি নিজে করার চেষ্টা করি এবং দলের খেলোয়াড়দের কাছ থেকে চাই তা হলো প্রক্রিয়াটা অনুসরণ করছে কি না এবং খেলোয়াড়দের মধ্যে ওই তাড়না আছে কি না। খেলোয়াড়রা শতভাগ দিচ্ছে কি না।’

‘এ জিনিসটা আমি খেলোয়াড়দের কাছ থেকে চাই এবং আমি নিজেও চেষ্টা করি। যখন আমি দেখি এই জিনিসগুলো হচ্ছে, ফলাফল এমনিই আসবে। কোনোদিন আমরা জিতবো, কোনোদিন হয়তো জিতবো না। কিন্তু আগেই যদি ফল নিয়ে চিন্তা করি তাহলে কঠিন। এটা আমার ব্যক্তিগত পরিকল্পনা।’-শান্ত আরও যোগ করেন।

শান্তকে আপাতত এই সিরিজের জন্যই দায়িত্ব দিয়েছে বোর্ড। সিলেটের পর ঢাকায় দল কেমন করে সেটাই দেখার। তবে দায়িত্ব পাকাপাকির ভাবনায় সিলেট টেস্ট দিয়ে শান্ত একধাপ এগিয়ে গেলেন। নামের পাশে মেরিট পয়েন্টও যুক্ত হলো। তবে ভবিষ্যৎ নিয়ে তিনি এখন মোটেও চিন্তিত ন। তার ভাবনায় এখন কেবল ঢাকা টেস্ট। যেটা জিতে শান্ত নিশ্চিত করতে চান সিরিজ

বাংলাদেশ অধিনায়ক বলেন,‘জানি না আমি (অধিনায়কত্বের দৌড়ে এগিয়ে যাওয়া)। আমি এগিয়ে থাকবো কি না আসলেই জানি না। হয়তো যারা বাইরে থেকে দেখেছেন, তারা আরও ভালো বলতে পারবেন। আমার কাজ হলো আমি যতটুকু জানি,ওই অনুযায়ী কীভাবে দলের সাহায্য করতে পারি। এটাই আমি করার চেষ্টা করেছি। এর বাইরে আমি আসলে এ বিষয়ে কিছু বলতে পারবো না।’

ঘরের মাঠে টেস্টে পর নিউ জিল্যান্ড সফরে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিতে তার কাঁধে নেতৃত্বের দায়িত্ব দিয়েছে বোর্ড। সামনে পাকাপাকি দায়িত্ব দিলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।